প্রশ্ন ও উত্তর আকারে চর্যাপদ সম্পর্কিত তথ্য

প্রশ্ন ও উত্তর আকারে চর্যাপদ সম্পর্কিত তথ্য
প্রশ্ন ১: বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন কী?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন হলো চর্যাপদ।
প্রশ্ন ২: চর্যাপদ রচনার সময়কাল কী?
উত্তর:
- মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে: ৬৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ
- সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে: ৯৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ
প্রশ্ন ৩: চর্যাপদ প্রথম কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর: ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা ১৩১৪) মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজগ্রন্থশালা থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
প্রশ্ন ৪: চর্যাপদ কোন আমলে রচিত হয় এবং কখন নেপালে যায়?
উত্তর:
- চর্যাপদ রচিত হয় পাল আমলে।
- নেপালে যায় সেন আমলে।
প্রশ্ন ৫: ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ নামটি কে দেন এবং এর অর্থ কী?
উত্তর:
- ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ নামটি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দেন।
- অর্থ: কোনটি আচরণীয়, আর কোনটি নয়।
প্রশ্ন ৬: চর্যাপদের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় ও তত্ত্বকথা।
প্রশ্ন ৭: আবিষ্কৃত চর্যাপদের পদের সংখ্যা কত?
উত্তর: ৪৭.৫টি (সাড়ে ছেচল্লিশটি)।
প্রশ্ন ৮: চর্যাপদের প্রথম পদ ও এর রচয়িতা কে?
উত্তর:
- প্রথম পদ: “কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল”।
- রচয়িতা: লুইপা (বাংলা সাহিত্যের আদি কবি)।
প্রশ্ন ৯: চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেন কে?
উত্তর: কাহ্নপা (১৩টি পদ), যার অন্য নাম কৃষ্ণাচার্য।
প্রশ্ন ১০: চর্যাপদের অন্যতম বিখ্যাত পঙক্তি “অপণা মাংসে হরিণা বৈরী” কে রচনা করেছেন?
উত্তর: ভুসুকুপা।
প্রশ্ন ১১: চর্যাপদের শ্রেষ্ঠ কবি কাকে বলা হয়?
উত্তর: শবরপা (২৮ ও ৫০ নং পদের রচয়িতা)।
প্রশ্ন ১২: চর্যাপদের ভাষাকে কী বলা হয়?
উত্তর:
- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী: সন্ধ্যাভাষা বা আলো-আঁধারি ভাষা।
- ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: বঙ্গকামরূপী ভাষা।
- ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়: বাংলা ভাষা বলে প্রমাণ করেন।
প্রশ্ন ১৩: চর্যাপদের টীকাকার কে?
উত্তর: মুনিদত্ত। তবে তিনি ১১ নং পদের ব্যাখ্যা দেননি।
প্রশ্ন ১৪: চর্যাপদের ছন্দ কী?
উত্তর: মাত্রাবৃত্ত ছন্দ।
প্রশ্ন ১৫: চর্যাপদের অন্যান্য নাম কী কী?
উত্তর: চর্যাপদের অন্যান্য নাম:
- চর্যাগীতিকোষ
- দোহাকোষ
- চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়
- চর্যাগীতিকা
প্রশ্ন ১৬: চর্যাপদের ভাষায় কয়টি ভাষার সংমিশ্রণ রয়েছে?
উত্তর: ৫টি ভাষার সংমিশ্রণ রয়েছে:
- বাংলা
- হিন্দি
- মৈথিলি
- অসমিয়া
- উড়িয়া
প্রশ্ন ১৭: চর্যাপদের ইংরেজি অনুবাদ কে করেছেন?
উত্তর: হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ (গ্রন্থ: “Mystic Poetry of Bangladesh”, প্রকাশ: হার আনন্দ প্রকাশন, দিল্লি, ২০১৭)।
প্রশ্ন ১৮: চর্যাপদ সংক্রান্ত প্রথম উল্লেখ কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর: ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রকাশিত “Sanskrit Buddhist Literature in Nepal” গ্রন্থে নেপালের বৌদ্ধতান্ত্রিক সাহিত্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
প্রশ্ন ১৯: চর্যাপদ প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা ১৩২৩) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে “হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন ২০: চর্যাপদে কয়টি পদ খণ্ডিত বা অনুপস্থিত?
উত্তর:
- ২৩ নং পদটি খণ্ডিত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
- ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং পদ পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন ২১: চর্যাপদে কয়জন পদকর্তার নাম পাওয়া যায়?
উত্তর:
- ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: ২৩ জন পদকর্তার কথা উল্লেখ করেছেন।
- সুকুমার সেন: ২৪ জন পদকর্তার কথা বলেছেন।
প্রশ্ন ২২: কোন পদকর্তাকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম কবি বলা হয়?
উত্তর: লুইপা (চর্যাপদের প্রথম পদের রচয়িতা)।
প্রশ্ন ২৩: চর্যাপদের কোন পদকর্তাকে শ্রেষ্ঠ কবি বলা হয়?
উত্তর: শবরপা (২৮ ও ৫০ নং পদের রচয়িতা)।
প্রশ্ন ২৪: কোন চর্যাকার নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন?
উত্তর: ভুসুকুপা।
প্রশ্ন ২৫: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রাচীনতম চর্যাকার কাকে বলেছেন?
উত্তর: শবরপা।
প্রশ্ন ২৬: চর্যাপদের কোন দুই চর্যাকারদের পদ পাওয়া যায়নি?
উত্তর: তন্ত্রীপা ও লাড়ীডোম্বী।
প্রশ্ন ২৭: কোন চর্যাকার সম্পর্কে অনেকে ‘কুকুরীপানারী’ বলে মনে করেন?
উত্তর: কুকুরীপা।
প্রশ্ন ২৮: চর্যাপদের ভাষা সন্ধ্যাভাষা বলার কারণ কী?
উত্তর: ভাষাটি আলো-আঁধারি ভাষা, যা সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশের সংমিশ্রণে গঠিত।
প্রশ্ন ২৯: চর্যাপদের ভাষা বাংলা বলে কে প্রমাণ করেন?
উত্তর: ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন ৩০: চর্যাপদের টীকার তিব্বতি অনুবাদ কে করেন?
উত্তর: কীর্তিচন্দ্র।
প্রশ্ন ৩১: চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন।
প্রশ্ন ৩২: চর্যাপদ কোন ছন্দে রচিত?
উত্তর: মাত্রাবৃত্ত ছন্দ।
প্রশ্ন ৩৩: চর্যাপদে কয়টি প্রবাদবাক্য পাওয়া যায়?
উত্তর: ৬টি প্রবাদবাক্য।
প্রশ্ন ৩৪: চর্যাপদের ইংরেজি অনুবাদের গ্রন্থের নাম কী এবং কে অনুবাদ করেছেন?
উত্তর:
- গ্রন্থের নাম: “Mystic Poetry of Bangladesh”
- অনুবাদক: হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ
- প্রকাশক: হার আনন্দ প্রকাশন, দিল্লি (মার্চ, ২০১৭)